নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লা সদর জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পাস থেকে নবজাতক চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বহির্বিভাগে সহজে ডাক্তার দেখানোর টিকেট কেটে দিবে বলে লোভ দেখিয়ে নানীর কোল থেকে চার দিনের নবজাতক শিশুকে নিয়ে পালিয়ে গেছে বোরকা পরিহিত এক নারী। এই ঘটনায় তোলপাড় চলছে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে। মেয়েকে খুঁজতে হন্যে হয়ে বেড়াচ্ছে বাবা জসিম উদ্দিন,আর গাইনী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বারবার।
স্বজনদের চোখে ধোকা দিয়ে শিশু নিয়ে পালিয়ে যাবার ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ সহ জেলা পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান ।
রবিবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১০ টায় সদর হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে এই ঘটনা ঘটে। চুরি যাওয়া নবজাতকের বয়স চারদিন। ওই নবজাতক হাসপাতালেই জন্ম নেয় এবং তার মা আয়শা আক্তার কলিসহ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন।
নবজাতক কুমিল্লা সদর উপজেলার বারোপাড়া এলাকার জসিম উদ্দীনের ও আয়েশা আক্তার কলি দম্পতির সন্তান৷ তাদের আরো একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।নবজাতক দেখাশোনার জন্য আয়েশা আক্তার কলির সাথে তার মা নুরজাহান বেগম অবস্থান করছিলেন।
নবজাতকের নানি নূরজাহান বেগম বলেন, সকালে বাচ্চার কান্নাকাটি দেখে ডাক্তার দেখানোর জন্য গাইনী ওয়ার্ড থেকে বহির্বিভাগের দিকে যেতে থাকি। এ সময় বোরকা পর এক নারী আমাকে জানায় তিনি সহজে ডাক্তার দেখানোর জন্য বহির বিভাগের টিকেট কেটে দিতে পারবেন। আমি তার কথায় বিশ্বাস করি। সেই বোরকা পরা মহিলা আরো বলে বাচ্চা কোলে নিয়ে গেলে টিকেট দিবে, অন্যথায় দিবেনা। যে কারণে আমি আমার নাতনিকে তার কোলে দিয়ে টিকেট নিতে বলি।কিন্তু কোন ফাঁকে সে আমার নাতনীকে নিয়ে চলে যায়। আমি কিছু বুঝতে পারিনি।
বাবা জসিম উদ্দীন বলেন, আমি ইপিজেড এ কাজ করি। গত বৃহস্পতিবার আমার মেয়ে বাবু জন্ম নেয়। আমার স্ত্রী এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিল। আজ গাইনি চিকিৎসক দেখানোর জন্য আমার শাশুড়ি টিকিট কাউন্টারে আসে। এখানে আসলে একজন মহিলা আমার শাশুড়িকে বলে উনি টিকিট কেটে দিবেন। নবজাতককে উনার নিকট দেয়ার জন্য। আমার শাশুড়িও উনার কোলে বাবুকে দেয়। এরপর উনি বাবুকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
কন্যা সন্তানকে হারিয়ে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নবাব ফয়জুন্নেছা ওয়ার্ডে অবিরত কেঁদে যাচ্ছেন মা আয়েশা আক্তার কলি।
এদিকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আব্দুল করিম খন্দরকার বলেন, হাসপাতালের ওয়ার্ড এর ভেতর থেকে খোয়া যায়নি। বাইরের ক্যাম্পাসে শিশু স্বজনদের কাছেই ছিল, চুরির ঘটনা কিনা বলা কঠিন।
বাচ্চাতো বাচ্চার আপনজনের হাতেই ছিল। চুরি হয় কিভাবে? টিকিট কাটার কথা বলে বাচ্চাকে কেন নিবে ওর নানীর কাছ থেকে? বাচ্চা তো ভেতরে ভর্তি। পুকুরের ওই পারে গাইনী ওয়ার্ডে। বাচ্চা সুস্থ। তাহলে কেন নিয়ে আসবে? চুরি হইছে নাকি অন্যকিছু হয়েছে ব্যাপারটা পুলিশ তদন্ত করবে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক তদন্ত ত্রিনাথ সাহা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশসহ (ডিবি) একাধিক টিম কাজ করছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page